০১:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪

ফরিদপুরে বাকিতে বিক্রিত বিএডিসির বীজের টাকা তুলতে ডিলারের হারভেস্টার মেশিন জব্দ

  • Desk Report
  • Update Time : ০৮:২৫:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • ৩৭ Time View

ইদানিং রিপোর্টঃ-  ফরিদপুরে বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের বাকিতে বিক্রি করা সরিষা বীজের টাকা তুলতে ডিলারের হারভেস্টার বা ধান কাটার আধুনিক মেশিন জব্দ করে রেখেছে বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের স্টোর কিপার তুষার আহমেদ পলাশ। এদিকে হারভেস্টার মেশিনটি উদ্ধারে ৯৯৯ কল করে পুলিশের সহায়তা চাইলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সমাধানের পরামর্শ দেন।
জানা যায়, বিএডিসি ডাল ও তেল বীজ অফিসে আমন ধান কাটার জন্য মৌখিক চুক্তিতে ১০ দিনের জন্য হারভেস্টার মেশিনটি ভাড়া দেন টিপু সুলতান। তিনি বিএডিসির তালিকাভুক্ত ডিলার ও চাষী। মার্কেটিং বিভাগ থেকে তিনি সরকারী বীজ ক্রয় করে থাকেন। আজ বৃহস্পতিবার কাজ শেষ করে হারভেস্টার মেশিনটি বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও মেশিনটি জব্দ করে বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের স্টোর কিপার তুষার আহমেদ পলাশ। এ ঘটনায় মেশিনটির চালক বিপ্লব মোল্লা ৯৯৯ কল করে পুলিশ খবর দেন। অভিযোগকারী বিএডিসির ডিলার টিপু সুলতান বলেন, বিএডিসি কর্তৃপক্ষ কোন টাকা পাবে না। তিনি বলেন, আমি ৩ বছর আগে ১৮ টন সরিষা বীজ ক্রয় করি। তখন ৫ টনের টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি থাকে ১৩ টনের টাকা। এর মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা পরিশোধ করি। আরো ৭ লক্ষ টাকা তারা আমার কাছে বাকি ছিল। তিনি বলেন, তাদের পাওনা বাকি ৭ লক্ষ টাকা আমি স্টোর কিপার তুষার আহমেদ পলাশ ও তার সহযোগী বিএডিসির ডিলার মো: জিন্নার কাছে আমি আমার একটি জমি বিক্রি করে ৭ লক্ষ টাকা পরিশোধ করি এবং জমির মূল্য হিসেবে জিন্নার কাছ থেকে আরো ৩ লক্ষ টাকা নেই। আমার ২০ লক্ষ টাকা জমির দাম তারা ১০ লক্ষ টাকা দেয়। তিনি বলেন, বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের স্টোর কিপার তুষার এ টাকা অস্বীকার করে আমার কাছে ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দাবী করে। আমি দিতে না চাইলে আমার হারভেস্টার মেশিনটি আজ জব্দ করে তার চালককে হুমকি প্রদান করে। চালক বিপ্লব মোল্লা বলেন, আমার কাছ থেকে তুষার আহমেদ পলাশ জোর করে চাবি নিয়ে যায়।
হারভেস্টার মেশিনটি ভাড়া নিয়েছিলেন বিএডিসি ডাল ও তেল বীজ অফিস। এ অফিসের উপ সহকারী পরিচালক মো: রাশেদ খান বলেন, আমার অফিস থেকে হারভেস্টার মেশিনটি মার্কেটিং অফিসে কিভাবে গেল তা আমার জানা নেই। তবে খবর পেয়ে পুলিশ আসলে আমি জানতে পারি। অর্থ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পারি। দুপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের অফিসারবৃন্দসহ সকল পক্ষ নিয়ে বিএডিসি (বীজ প্রসেসিং) জয়েন্ট ডিরেক্টর একরামুল হক স্যারের রুমে বসে মিমাংসা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের স্টোর কিপার তুষার আহমেদ পলাশ বলেন, ডিলার টিপু সুলতান আমার অফিস থেকে ৩/৪ বছর আগে বাকিতে ১৮ টন সরিষা বীজ ক্রয় করেন। সেই বীজ মূল্যের ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাওনা আছে। তিনি বলেন, টিপু সুলতানের কাছে পাওনা টাকা নিয়ে কোতয়ালী থানায় মামলা দেওয়া হয়। সেখানে সো মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান। পরে ফরিদপুর পৌরসভার কাউন্সিলর রাজিব মন্ডলও এ নিয়ে একবার সালিশ করে দেন তবুও তিনি টাকা দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, এজন্য আমার অফিসের ডিডি স্যারের নির্দেশে তার মেশিনট জব্দ করে রাখা হয়েছে। তিনি টাকা পরিশোধ করে মেশিন নিয়ে যাবেন। বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের উপ-পরিচালক সায়েদ কামরুল হক বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে সমাধানের জন্য বসেছিলাম। আজ সমাধান হয় নি। একটু সময় দেন। আগামী রবিবার আবার বসে সমাধান করা হবে। বিএডিসি প্রসেসিং এর জয়েন্ট ডিরেক্টর একরামুল হক বলেন, অফিস অনেকদিন ধরে তার কাছে পাওনা টাকা তুলে পারছিলোনা। তাই তার সম্পদ আটকে রেখে টাকা তুলতে একটি পথ বের করা হয়েছে। বাকিতে বিএডিসির বীজ বিক্রির নিয়ম আছে কি না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিস চালাতে অনেক আনঅফিশিয়াল কাজ করতে হয়।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার এসআই আলী আহমেদ ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, টিপু সুলতানের কাছে অফিস বীজ বিক্রয়ের কিছু টাকা পাবে। টিপু সুলতান হারভেস্টার মেশিনটি ফিরিয়ে নিতে টাকা পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। এটা বিএডিসির অফিসার সহ সকলের সামনে কথা হয়। এজন্য এ বিষয়ে আর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কোন কিছু থাকে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

মধুখালীতে বাবু মেমোরিয়াল হাসপাতালের উদ্বোধন

ফরিদপুরে বাকিতে বিক্রিত বিএডিসির বীজের টাকা তুলতে ডিলারের হারভেস্টার মেশিন জব্দ

Update Time : ০৮:২৫:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

ইদানিং রিপোর্টঃ-  ফরিদপুরে বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের বাকিতে বিক্রি করা সরিষা বীজের টাকা তুলতে ডিলারের হারভেস্টার বা ধান কাটার আধুনিক মেশিন জব্দ করে রেখেছে বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের স্টোর কিপার তুষার আহমেদ পলাশ। এদিকে হারভেস্টার মেশিনটি উদ্ধারে ৯৯৯ কল করে পুলিশের সহায়তা চাইলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সমাধানের পরামর্শ দেন।
জানা যায়, বিএডিসি ডাল ও তেল বীজ অফিসে আমন ধান কাটার জন্য মৌখিক চুক্তিতে ১০ দিনের জন্য হারভেস্টার মেশিনটি ভাড়া দেন টিপু সুলতান। তিনি বিএডিসির তালিকাভুক্ত ডিলার ও চাষী। মার্কেটিং বিভাগ থেকে তিনি সরকারী বীজ ক্রয় করে থাকেন। আজ বৃহস্পতিবার কাজ শেষ করে হারভেস্টার মেশিনটি বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও মেশিনটি জব্দ করে বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের স্টোর কিপার তুষার আহমেদ পলাশ। এ ঘটনায় মেশিনটির চালক বিপ্লব মোল্লা ৯৯৯ কল করে পুলিশ খবর দেন। অভিযোগকারী বিএডিসির ডিলার টিপু সুলতান বলেন, বিএডিসি কর্তৃপক্ষ কোন টাকা পাবে না। তিনি বলেন, আমি ৩ বছর আগে ১৮ টন সরিষা বীজ ক্রয় করি। তখন ৫ টনের টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি থাকে ১৩ টনের টাকা। এর মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা পরিশোধ করি। আরো ৭ লক্ষ টাকা তারা আমার কাছে বাকি ছিল। তিনি বলেন, তাদের পাওনা বাকি ৭ লক্ষ টাকা আমি স্টোর কিপার তুষার আহমেদ পলাশ ও তার সহযোগী বিএডিসির ডিলার মো: জিন্নার কাছে আমি আমার একটি জমি বিক্রি করে ৭ লক্ষ টাকা পরিশোধ করি এবং জমির মূল্য হিসেবে জিন্নার কাছ থেকে আরো ৩ লক্ষ টাকা নেই। আমার ২০ লক্ষ টাকা জমির দাম তারা ১০ লক্ষ টাকা দেয়। তিনি বলেন, বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের স্টোর কিপার তুষার এ টাকা অস্বীকার করে আমার কাছে ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দাবী করে। আমি দিতে না চাইলে আমার হারভেস্টার মেশিনটি আজ জব্দ করে তার চালককে হুমকি প্রদান করে। চালক বিপ্লব মোল্লা বলেন, আমার কাছ থেকে তুষার আহমেদ পলাশ জোর করে চাবি নিয়ে যায়।
হারভেস্টার মেশিনটি ভাড়া নিয়েছিলেন বিএডিসি ডাল ও তেল বীজ অফিস। এ অফিসের উপ সহকারী পরিচালক মো: রাশেদ খান বলেন, আমার অফিস থেকে হারভেস্টার মেশিনটি মার্কেটিং অফিসে কিভাবে গেল তা আমার জানা নেই। তবে খবর পেয়ে পুলিশ আসলে আমি জানতে পারি। অর্থ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পারি। দুপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের অফিসারবৃন্দসহ সকল পক্ষ নিয়ে বিএডিসি (বীজ প্রসেসিং) জয়েন্ট ডিরেক্টর একরামুল হক স্যারের রুমে বসে মিমাংসা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের স্টোর কিপার তুষার আহমেদ পলাশ বলেন, ডিলার টিপু সুলতান আমার অফিস থেকে ৩/৪ বছর আগে বাকিতে ১৮ টন সরিষা বীজ ক্রয় করেন। সেই বীজ মূল্যের ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাওনা আছে। তিনি বলেন, টিপু সুলতানের কাছে পাওনা টাকা নিয়ে কোতয়ালী থানায় মামলা দেওয়া হয়। সেখানে সো মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান। পরে ফরিদপুর পৌরসভার কাউন্সিলর রাজিব মন্ডলও এ নিয়ে একবার সালিশ করে দেন তবুও তিনি টাকা দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, এজন্য আমার অফিসের ডিডি স্যারের নির্দেশে তার মেশিনট জব্দ করে রাখা হয়েছে। তিনি টাকা পরিশোধ করে মেশিন নিয়ে যাবেন। বিএডিসি মার্কেটিং বিভাগের উপ-পরিচালক সায়েদ কামরুল হক বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে সমাধানের জন্য বসেছিলাম। আজ সমাধান হয় নি। একটু সময় দেন। আগামী রবিবার আবার বসে সমাধান করা হবে। বিএডিসি প্রসেসিং এর জয়েন্ট ডিরেক্টর একরামুল হক বলেন, অফিস অনেকদিন ধরে তার কাছে পাওনা টাকা তুলে পারছিলোনা। তাই তার সম্পদ আটকে রেখে টাকা তুলতে একটি পথ বের করা হয়েছে। বাকিতে বিএডিসির বীজ বিক্রির নিয়ম আছে কি না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিস চালাতে অনেক আনঅফিশিয়াল কাজ করতে হয়।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার এসআই আলী আহমেদ ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, টিপু সুলতানের কাছে অফিস বীজ বিক্রয়ের কিছু টাকা পাবে। টিপু সুলতান হারভেস্টার মেশিনটি ফিরিয়ে নিতে টাকা পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। এটা বিএডিসির অফিসার সহ সকলের সামনে কথা হয়। এজন্য এ বিষয়ে আর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কোন কিছু থাকে না।