ভাঙ্গা প্রতিনিধি : – ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের দুই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে। এ সময় দুটি বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১১ নভেম্বর) ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের সরইবাড়ি গ্রামে। গুরুতর আহত ৪ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ১২ জনকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। বাকীরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে। এলাকায় এক প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, তুজারপুর ইউনিয়নের সরইবাড়ি গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষ রয়েছে। স্থানীয়ভাবে পক্ষ দুটি ‘তালুকদার গ্রুপ ‘ ও ‘ খান গ্রুপ ‘ নামে পরিচিতি। তালুকদার পক্ষের নেতৃত্ব দেন সরইবাড়ি গ্রামের বাবুল তালুকদার (৭০) ও খান পক্ষের নেতৃত্ব দেন সরইবাড়ি গ্রামের কবির খান (৫৫)। দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিলো। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে সোমবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে শুরু হয়ে সকাল সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলে। দুই পক্ষের কয়েকশত লোক রামদা, ঢাল, সরকি, ইট, পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
তালুকদার পক্ষের আবু জাফর হাওলাদার (৫৮) বলেন, সপ্তাহ খানেক আগে খান গ্রুপের লোকজন আমাদের পক্ষের লোকজনের পুকুরের মাছ লুট করে নিয়ে যায়। এরপর আমরা ফরিদপুরে আদালতে মামলা করি। গত রবিবার মামলার কপি উঠায় খান গ্রুপ। এরপর রবিবার বিকালে আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। সোমবার সকালেই আমাদের উপর আক্রমণ করে। খান গ্রুপের শরীফ খান বলেন, ১০/১২ দিন আগে তালুকদাররা আমাদের পক্ষের মহিউদ্দিনকে গ্রামের পথে পেয়ে মারপিট করে। গত শনিবার তালুকদাররা আমাদের পক্ষের লোকজনের সরইবাড়ি গ্রামের ২-৩ টি দোকান ভাঙচুর করে। পাশাপাশি কয়েকটি নৌকা ভাঙচুর করে। এ নিয়ে উত্তেজনা ছিলো। সোমবার সকালে তালুকদারদের পক্ষের লোকজন আমাদের উপর অতর্কিত আক্রমণ করে। বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করে। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গুরুতর আহত ৪ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এরা হলেন তালুকদার পক্ষের হাসমত হাওলাদার (৬৫), আবুল হোসেন মাতুব্বর(৬০), লতিফ হাওলাদার (৬০) ও খান পক্ষের রাজু চৌধুরী (২৯)। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে তালুকদার পক্ষের জুবায়ের হাওলাদার (৩২), পান্নু মাতুব্বর (৫০), ওবায়দুর রহমান (৪০), রসমত হাওলাদার (৪৪), আবু জাফর হাওলাদার। খান পক্ষের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে রুবেল চৌধুরী (৩৫), মিন্টু খান (৪৪), নাসির চৌধুরী (৪৪), শরীফ খান (২৭), রফিক চৌধুরী (২৭), রুবেল হাওলাদার (৩৫), ইয়াসিন (২৩)।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে তুজারপুর ইউনিয়নের সরইবাড়ি গ্রামে তালুকদার ও খান পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এলাকায় এক প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনো কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি।