ইদানিং রিপোর্টঃ- ফরিদপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে ফরিদপুর শহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে ফরিদপুর জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি মৌলানা আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং জেলার সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুল নাসির এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক, এ সময় বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা শায়খুল হাদিস আল্লামা হেলাল উদ্দিন সাহেব, উপদেষ্টা শায়খুল হাদিস আল্লামা আবুল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমিন, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি শরাফত হুসাইন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা , কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হোসেন জালালী কেন্দ্রীয় সহ বায়তুল মাল সম্পাদক , মাওলানা ফজলুর রহমান কেন্দ্রীয় সহ প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, ফরিদপুর জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি সুবাহান মাহমুদ সহ-সভাপতি , মুফতি মাহমুদ হাসান ফায়েক। সহ-সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান মোল্লা, এ সময় ফরিদপুর ও পার্শ্ববর্তী জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বক্তব্যে বক্তারা বিগত দিনের আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন। গত ১৬ বছর ওলামা মাশায়েখের উপর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে গুম, খুন, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল বন্দি করেছিলেন তা ভুলে যাবার মত নয়। তারা বলেন ৯৬ % মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ যে দেশের ইসলামের পতাকা চিরতরে নিষিদ্ধ করে দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা এখনো বিভিন্ন পায়তারা করছেন। গত ০৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের ক্ষমতা এদেশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীন করে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করেন। বক্তারা ইসকনকে অবিলম্বে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে তাই করে তাদের কর্মকান্ড বন্ধ করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট দাবি জানান।
বক্তারা বলেন চট্টগ্রামের একজন আইনজীবীকে যেভাবে তারা হত্যা করেছে তা খুবই দুঃখজনক এবং উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা একটি শান্তি প্রিয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই যেখানে সম্প্রীতি বজায় থাকবে। আমরা যদি সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে আমাদের কর্মকাণ্ড আগামী দিন এগিয়ে যেতে পারব। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আমরাই একটি শান্তিপ্রিয় ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গড়তে পারবো। বক্তারা আক্ষেপ করে বলেন ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার পঞ্চপল্লীর মুসলমান হত্যার সুষ্ঠু বিচার এখনো হয়নি। আমাদের এই দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর কাউকে হত্যা করে আমরা শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র গঠন করতে চাই না। বক্তারা বলেন ২০১৩ সালে ৫ ই মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অনুষ্ঠানে যেভাবে গুলি করে আমাদের সাধারণ জনগণের উপর ওপর বর্বর হামলা চালিয়েছিল সেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আজকে দেশ থেকে পালিয়েছে। যদি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার পঞ্চপল্লীর মুসলিম পরিকল্পিত হত্যার বিচার হতো তাহলে গতকালকে চট্টগ্রামের যে আইনজীবীকে হত্যা করেছে তার পুনরাবৃত্তি ঘটতো না। বিগত ১৫ বছরে ভারতের সাহায্য নিয়ে শেখ হাসিনা যেভাবে নির্বাচন চেয়েছে ক্ষমতা টিকে থাকার জন্য তাই করেছে। ভারতের সক্রিয় মদদে শেখ হাসিনা দেশের সংবিধান ভঙ্গ করে জাতির সাথে বেইমানি করেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট হতে ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনা প্রতিশোধের রাজনীতি করেছেন এই ছিল তার প্রতিশোধ পরায়ন রাজনীতি। আর্থিক খাতে সকল ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে বিদেশে অর্থ পাচার করে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা একেবারে ভঙ্গুর অবস্থায় রেখে গিয়েছেন। ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করে দিয়েছেন । ব্যাংকে টাকা না থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে । বক্তারা বলেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ধ্বংস করাই ছিল শেখ হাসিনার মূল উদ্দেশ্য যাতে করে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে আর মাথা উঁচু করে না দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশের সকল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকলকে শেখ হাসিনা তার নিজের জন্য পেটোয়া বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করেছে। বাংলাদেশে নতুন করে ওই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার জন্য হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা লাগানোর একটি সুপরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে তাই আমরা সকলেই সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে এবং মোকাবেলা করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। জনগণের জানমাল রক্ষা ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর আপনাকে যদি জনগণ চায় তাহলেই আপনি থাকবেন না হয় অন্য কোন ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করবেন না যদি ভারতে বসে অন্য কোন ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করেন তাহলে আমরা সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তা নস্যাৎ করে দিব। তাই এখন এই সময় বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা ও ইনসাফপূর্ণ সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোরআন সুন্নাহ মোতাবেক একটি সংবিধান গড়ে তোলার আহ্বান জানান। আগামীতে বাংলাদেশে আর বহিবিশ্বের কোন আধিপত্য চলবে না আমরা নিজেরাই আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তুলবো যাতে অন্যের ধরনা ধরতে না হয়।
এর আগে বিভিন্ন স্থান থেকে একাধিক মিছিল সমাবেশ স্থলে এসে উপস্থিত হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে দেশ ও মানুষের কল্যাণ কামনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় ।